দেশে কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানির ঘটনা আহরহ ঘটলেও তা রোধে কোনো আইন নেই। আওয়ামী লীগ আমলে কয়েক দফা এ সংক্রান্ত আইনের খসড়া করা হলেও তা আর আলোর মুখ দেখেনি।
অবশেষে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আইনটি করার উদ্যোগ নিয়েছে। এজন্য ‘কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ এবং সুরক্ষা আইন, ২০২৫’ এর খসড়া করেছে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। স্বল্প সময়ের মধ্যে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আইনের খসড়াটি চূড়ান্ত করতে চায় মন্ত্রণালয়।কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আদালতের নীতিমালাকে ভিত্তি ধরে মূলত আইনের খসড়াটি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।খসড়া আইনে যৌন হয়রানি বিষয়ে অভিযোগ গ্রহণ এবং তদন্ত পরিচালনা ও সুপারিশের জন্য প্রতিটি কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অভিযোগ কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া অভিযোগ তদন্ত প্রক্রিয়া, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, কোন কোন কাজ যৌন হয়রানি হিসেবে গণ্য হবে এবং মিথ্যা অভিযোগ ও সাক্ষ্য দেওয়ার শাস্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে খসড়া আইনে।
যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সংক্রান্ত কোনো সুনির্দিষ্ট আইন না থাকায় বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি বাদী হয়ে ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট হাইকোর্টে একটি মামলা করে। ২০০৯ সালের ১৪ মে হাইকোর্ট এ মামলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধসহ নারীর সার্বিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিতকরণ এবং নারী-পুরুষ সমতা প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন নির্দেশনাসহ রায় দেন।
শ্রমজীবী নারীদের নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে একটি আইন প্রণয়ন করার কথা। কিন্তু প্রায় ১৬ বছরে এই আইনটি হয়নি, যদিও কয়েক দফা লোক দেখানো খসড়া করা হয়েছিল। তা চূড়ান্ত করতে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার আন্তরিক ছিল না।
‘আমাদের মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হওয়াটা জরুরি।
সেই চেষ্টাও আমরা করছি। সেটা না হলে আইন করে, বাধ্য করে বেশিদূর এগোনো যাবে না।
’- মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ
বেসরকারি সংস্থা ‘কর্মজীবী নারী’ ২০১৯ সালে ‘তৈরি পোশাক কারখানায় নারীবান্ধব ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ’ সংক্রান্ত এক গবেষণা পরিচালনা করে। গবেষণাটি ৩২৭টি পোশাক কারখানার তিন হাজার ১৪ জন নারী শ্রমিক নিয়ে পরিচালিত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, ৭২ শতাংশ নারী শ্রমিক মৌখিক হয়রানি এবং ৬২ শতাংশ নারী শ্রমিক মানসিক হয়রানির অভিযোগ করেন। এছাড়া ২১ শতাংশ নারী শ্রমিক শারীরিক হয়রানি এবং ১৪ শতাংশ যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করা নারীদের অবস্থা আরও ভয়াবহ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খসড়া আইনের বিষয়ে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারীদের যৌন হয়রানি রোধে আমরা একটি আইন করছি। আইনের খসড়া করা হয়েছে। খসড়াটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। চূড়ান্ত করতে আমরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একটি মিটিং করেছি। আরও একটি মিটিং হবে। এর মধ্যে আমরা খসড়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মতামত নেওয়ারও কাজ করছি। দ্রুতই এটি চূড়ান্ত করা হবে।’
মমতাজ আহমেদ বলেন, ‘আমাদের মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হওয়াটা জরুরি। সেই চেষ্টাও আমরা করছি। সেটা না হলে আইন করে, বাধ্য করে বেশিদূর এগোনো যাবে না।’
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য নইমুল আহসান জুয়েল জাগো নিউজকে বলেন, ‘আইএলও কনভেনশন ১৯০ (কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি নিরসন) বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পর্কিত হচ্ছে এ আইনটি। সরকারকে এ কনভেনশনটি অনুসমর্থন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘নারী শ্রমিক ও ছাত্রীরা প্রায়ই ইভটিজিং ও যৌন হয়রানির শিকার হয়। আইন হলে এর অধীনে মামলা হবে। তখন অনেকেই সচেতন হবেন। যৌন হয়রানি রোধে আইন হয়েছে। এটির প্রচারণাই অনেককে এ কাজ করতে নিরুৎসাহিত করবে।’
‘পোশাক কারখানায় মিড লেভেলে নারী শ্রমিকদের হয়রানিটা বেশি। সরকারকে আইন করার সঙ্গে সঙ্গে আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুসমর্থন করতে হবে’ বলেন নইমুল আহসান জুয়েল।
অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি আহ্বায়কসহ সর্বনিম্ন পাঁচজন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত হবে।
কমিটির আহ্বায়ক হবেন প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের মধ্যে উচ্চপর্যায়ে কর্মরত নারী
বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একজন জ্যেষ্ঠ নারী সদস্য।
খসড়া আইনে বলা হয়েছে, যৌন হয়রানির অভিযোগ গ্রহণ এবং তদন্ত পরিচালনা ও সুপারিশ করার জন্য প্রতিটি কর্মক্ষেত্র এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি গঠন করবে। তবে যেখানে কর্মক্ষেত্র বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অফিস বা প্রশাসনিক ইউনিট বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত, সেক্ষেত্রে সব প্রশাসনিক ইউনিট বা অফিসে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি গঠন করতে পারবে।অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি আহ্বায়কসহ সর্বনিম্ন পাঁচজন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত হবে। কমিটির আহ্বায়ক হবেন প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের মধ্যে উচ্চপর্যায়ে কর্মরত নারী বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একজন জ্যেষ্ঠ নারী সদস্য। কমিটির অধিকাংশ সদস্য নারী হবেন। কমিটিতে আইনগত জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্য থেকে অন্তত দুজন বাইরের সদস্য নিয়োগ করতে হবে।
সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি নিজে বা তার কোনো মনোনীত প্রতিনিধি বা যার সামনে ঘটনা ঘটেছে, তিনি অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটির কাছে লিখিত বা মৌখিকভাবে বা অনলাইনে অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন বলে খসড়া আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।
কোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি যৌন হয়রানির ঘটনার তিন মাসের মধ্যে এবং একাধিক ঘটনার ক্ষেত্রে সর্বশেষ ঘটনার তিন মাসের মধ্যে কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ করতে পারবেন।
অভিযোগ দাখিলের ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে।
তদন্ত শেষ হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কমিটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তদন্তের
একটি প্রতিবেদন সরবরাহ করবে
অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই আইনে উল্লিখিত অভিযোগ তদন্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ ছাড়া কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে না জানিয়ে খসড়ায় বলা হয়েছে, প্রাথমিক তথ্য অনুসন্ধানের ভিত্তিতে কমিটি অভিযোগের প্রাথমিক ভিত্তি আছে কি না তা যাচাই করবে। প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্য যাচাই করে কমিটি সিদ্ধান্ত নেবে যে অভিযোগটির পূর্ণ বা আনুষ্ঠানিক তদন্ত হবে কি না বা অগ্রসর হওয়ার মতো যথেষ্ট ভিত্তি থাকলে অভিযোগটি নথিভুক্ত করা হবে।
অভিযোগ দাখিলের ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে। তদন্ত শেষ হওয়ার ১০ দিনের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কমিটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তদন্তের একটি প্রতিবেদন সরবরাহ করবে এবং এই প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর কাছেও সরবরাহ করতে হবে। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ অভিযোগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে।
শাস্তিমূলক ব্যবস্থা
সংশ্লিষ্ট কর্মক্ষেত্র বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান যৌন হয়রানি সংক্রান্ত নীতিমালা সাপেক্ষে কমিটি নিম্নোক্ত শাস্তিগুলোর মধ্যে এক বা একাধিক সুপারিশ করতে পারবে বলে খসড়া আইনে উল্লেখ করা হয়েছে-
তিরস্কার বা ভৎর্সনা বা মৌখিক সতর্কীকরণ; তিরস্কার বা ভৎর্সনা বা লিখিত সতর্কীকরণ; নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বেতনবৃদ্ধি বা পদোন্নতি স্থগিতকরণ; নির্দিষ্ট সময়ের জন্য টাইমস্কেল বন্ধ রাখা; অভিযুক্ত ব্যক্তির বেতন-ভাতাদি থেকে বা অন্য কোনো উৎস থেকে যৌন হয়রানির শিকার ব্যক্তির জন্য ক্ষতিপূরণ আদায় এবং তা যৌন হয়রানির শিকার ব্যক্তিকে প্রদান; নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ছাত্রত্ব স্থগিতকরণ; পদোন্নতি বা টাইম স্কেলের নিম্নধাপে অবনমন; বাধ্যতামূলক অবসর; চাকরিচ্যুতি; অব্যাহতি; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সুপারিশ পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।
অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নেওয়া সিদ্ধান্তে সংক্ষুব্ধ বা ক্ষতিগ্রস্ত কোনো ব্যক্তি লিখিতভাবে এই সিদ্ধান্তের ৩০ দিনের মধ্যে এখতিয়ার সম্পন্ন জেলা জজ আদালতে মামলা করতে পারবেন। যদি সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি সরকারি কর্মচারী হন, সেক্ষেত্রে এখতিয়ার সম্পন্ন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে পারবেন।
অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশের আগে তার বিদ্বেষপূর্ণ অভিপ্রায়, নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসারে তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হতে হবে।
যেখানে অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটি এ সিদ্ধান্তে পৌঁছায় যে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগটি বিদ্বেষপরায়ণ বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা অন্য কোনো ব্যক্তি অভিযোগটি মিথ্যা জেনেও অভিযোগ করেন কিংবা অভিযোগকারী ব্যক্তি বা তার পক্ষে কোনো সাক্ষী কোনো জালিয়াতিমূলক বা বিভ্রান্তিকর দলিল পেশ করেছেন, সেক্ষেত্রে কমিটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে বিধি দিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করতে পারবে।
তবে কেবল উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হলেই তা মিথ্যা অভিযোগ হিসেবে ধরে নেওয়া হবে না। অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশের আগে তার বিদ্বেষপূর্ণ অভিপ্রায়, নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসারে তদন্তের মাধ্যমে প্রমাণিত হতে হবে।
আইন প্রণয়নের ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে সরকার সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসক এবং উপজেলার ক্ষেত্রে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কয়েকটি ক্ষেত্রে যৌন হয়রানির অভিযোগ গ্রহণ বা প্রাপ্তির জন্য স্থানীয় অভিযোগ কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেবেন।
মনিটরিং বা তদারকি কমিটি সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মস্থল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতা এবং আইনের অন্যান্য বিধান লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে জরিমানা ও লাইসেন্স বাতিলসহ অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে।
খসড়া আইনে বলা হয়েছে, সরকার জাতীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মনিটরিং কমিটি গঠন করবে, যাতে এই আইনের আওতায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালন কার্যকরভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়।
মনিটরিং বা তদারকি কমিটি সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিভিন্ন কর্মস্থল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থতা এবং আইনের অন্যান্য বিধান লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে জরিমানা ও লাইসেন্স বাতিলসহ অন্যান্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে।
যেসব কাজ যৌন হয়রানি হিসেবে গণ্য হবে, তেমন কাজের একটি তালিকা খসড়া আইনে দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়- শারীরিক সংস্পর্শ এবং যৌনতার জন্য অগ্রসর হওয়া বা এ ধরনের প্রচেষ্টা; যৌন আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য প্রশাসনিক, কর্তৃত্বমূলক বা পেশাদারি ক্ষমতার অপব্যবহার; যৌন অনুগ্রহের দাবি কিংবা অনুরোধ জানানো; ভয়, প্রতারণা বা মিথ্যা আশ্বাসের মাধ্যমে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করার প্রচেষ্টা; যৌনতা বিষয়ক মন্তব্য, বক্তব্য, তামাশা বা অন্যান্য মৌখিক ক্রিয়াকলাপ যাতে যৌনতার প্রভাব বিদ্যমান; পর্নোগ্রাফি দেখানো বা যৌনতাপূর্ন বা যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কোনো বস্তু প্রদর্শন; কোনো কামুক দৃষ্টি, শিস দেওয়া বা যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কোনো অঙ্গভঙ্গি; ব্ল্যাকমেইলিং বা মর্যাদাহানির উদ্দেশ্যে কারও স্থির বা ভিডিও চিত্র ধারণ ও সংরক্ষণ, প্রদর্শন, বিতরণ, বিপণন ও প্রচার বা প্রকাশ করা; যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ কোনো বস্তু, ছবি, শব্দ, ইমেইল, টেক্সট বার্তা/খুদে বার্তা বা লিখিত নোট ব্যবহার; সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা অন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে যৌন সম্পর্কযুক্ত আপত্তিকর কোনো তথ্য বা বিষয় প্রকাশ করা বা যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ আপত্তিকর বার্তা প্রেরণ করা বা কোনো অশালীন মন্তব্য করা; কারও জেন্ডার পরিচয়ের ওপর ভিত্তি করে কটূক্তি করা বা অপমানজনক মন্তব্য করা; একজন ব্যক্তির জেন্ডার পরিচয়ের ওপর ভিত্তি করে পিতৃতান্ত্রিক ধারণা প্রসূত অবমাননাকর মন্তব্য করা এবং অন্য যে কোনো আচরণ, যা যৌন হয়রানির সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।